Thursday , March 28 2024
সর্বশেষ

সূরা আল-মুমতাহিনাহ

সূরা আল-মুমতাহিনাহ

শ্রেণীঃ মাদানী সূরা
নামের অর্থঃ নারী, যাকে পরীক্ষা করা হবে
সূরার ক্রমঃ ৬০
আয়াতের সংখ্যাঃ ১৩
পারার ক্রমঃ ২৮
রুকুর সংখ্যাঃ ২
সিজদাহ্‌র সংখ্যাঃ নেই

← পূর্ববর্তী সূরা সূরা আল-হাশর
পরবর্তী সূরা → সূরা আস-সাফ

নামকরণঃ

যেসব স্ত্রীলোক হিজরত করে চলে আসবে এবং মুসলমান হওয়ার দাবী করবে এ সূরার ১০ আয়াতে তাদের পরীক্ষা করতে আদেশ দেয়া হয়েছে । এ কারণে এ সূরার নামকরণ করা হয়েছে । আল মুমতাহিনা । মুমতাহানা এবং মুমতাহিনা এই দু’ভাবেই শব্দটি উচ্চারণ করা হয়ে থাকে । প্রথম প্রকার উচ্চারণের ক্ষেত্রে এর অর্থ হয়, যে স্ত্রীলোককে পরীক্ষা করা হয়েছে । আর দ্বিতীয় প্রকার উচ্চারণের ক্ষেত্রে এর অর্থ হয় পরীক্ষা গ্রহণকারী সূরা ।

নাযিল হওয়ার সময়-কালঃ

এ সূরায় এমন দুটি বিষয়ে কথা বলা হয়েছে যার সময় -কাল ঐতিহাসিকভাবে জানা । প্রথমটি হযরত হাতেব ইবনে আবু বালতা’আর (রা) ঘটনা । তিনি মক্কা বিজয়ের কিছুদিন পূর্বে একটি গোপন পত্রের মাধ্যমে কুরাইশ নেতাদের এ মর্মে অবগত করেছিলেন যে, রসূলুল্লাহ (সা) তাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ পরিচালনা করতে যাচ্ছেন । দ্বিতীয় ঘটনাটি মুসলমান মহিলাদের সম্পর্কে , যারা হুদাইবিয়ার সন্ধির পর মক্কা থেকে হিজরত করে মদীনায় আসতে শুরু করেছিল, এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল , সন্ধির শর্ত অনুসারে মুসলমান পুরুষদের মত তাদেরও কি কাফেরদের হাতে সোপর্দ করতে হবে? এ দুটি ঘটনার উল্লেখ থেকে এ বিষয়টি অকাট্যভাবে প্রমাণিত হয় যে, সূরাটি হুদাইবিয়ার সন্ধি এবং মক্কা বিজয়ের মধ্যবর্তী কোন এক সময়ে নাযিল হয়েছিল । এ দুটি ঘটনা ছাড়াও সূরার শেষের দিকে তৃতীয় আরেকটি ঘটনার উল্লেখ আছে । তাহলো, ঈমান গ্রহণের পর বাই’য়াত গ্রহণের উদ্দেশ্যে মহিলারা যখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে হাজির হবে তখন তিনি তাদের কাছ থেকে কি কি বিষয়ের প্রতিশ্রুতি নেবেন? সূরার এ অংশ সম্পর্কেও অনুমান হলো, তা মক্কা বিজয়ের অল্প কিছুকাল পূর্বে নাযিল হয়েছিল । কারণ মক্কা বিজয়ের পর কুরাইশদের পুরুষদের মত তাদের নারীরাও বিপুল সংখ্যায় একসাথে ইসলাম গ্রহণ করবে বলে মনে হচ্ছিলো । তাদের নিকট থেকে সামষ্টিকভাবে প্রতিশ্রুতি গ্রহণের প্রয়োজন তখন অবশ্যাম্ভাবী ছিল ।
বিষয়বস্তু ও মুল বক্তব্য

এ সূরাটির তিনটি অংশঃ

প্রথম অংশ সূরার শুরু থেকে ৯ আয়াত পর্যন্ত । সূরার সমাপ্তি পর্বের ১৩ নং আয়াতটিও এর সাথে সম্পর্কিত । হযরত হাতেব ইবনে আবু বালতা’আ শুধু তার পরিবার-পরিজনকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে রসূলুল্লাহ (সা) এর অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি গোপন সামরিক তথ্য শত্রুদের জানিয়ে দেয়ার চেষ্ট করেছিলেন । এটি যথাসময়ের ব্যর্থ করে দেয়া না গেলে মক্কা বিজয়ের সময় ব্যাপক রক্তপাত হতো । মুসলমানদেরও বহু মূল্যবান প্রাণ নষ্ট হতো এবং কুরাইশদেরও এমন বহু লোক মারা যেতো, যাদের দ্বারা পরবর্তী সময়ে ইসলামের ব্যাপক খেদমত পাওয়ার ছিল । শান্তিপূর্ণ উপায়ে মক্কা বিজিত হলে যেসব সুফল অর্জিত হতে পারতো তা সবই পণ্ড হয়ে যেতো । এসব বিরাট ও ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হতো শুধু এ কারণে যে, মুসলমানদেরই এক ব্যক্তি যুদ্ধের বিপদ থেকে নিজের সন্তান-সন্তুতিকে নিরাপদ রাখতে চেয়েছিল । এ আয়াতে হযরত হাতেব ইবনে আবু বালতা’আর এ কাজের কঠোর সমালোচনা করা হয়েছে । মারাত্মক এই ভুল সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে আল্লাহ তা’আলা সমস্ত ঈমানদারদের এ শিক্ষা দিয়েছেন যে, কোন ঈমানদারের কোন অবস্থায় কোন উদ্দেশ্যেই ইসলামের শত্রু কাফেরদের সাথে ভালবাসা ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক না রাখা উচিত । এবং এমন কোন কাজও না করা উচিত যা কুফর ও ইসলামের সংঘাতে কাফেরদের জন্য সুফল বয়ে আনে । তবে যেসব কাফের কার্যত ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে শত্রুতামূলক ও নির্যাতনমূলক কোন আচরণ করছে না তাদের সাথে প্রীতিপূর্ণ ও অনুগ্রহের আচরণ করায় কোন দোষ নেই ।

১০ ও ১১ আয়াত হলো, সূরাটির দ্বিতীয় অংশ । সেই সময় মারাত্মক জটিলতার সৃষ্টি করছিল এমন একটি সামাজিক সমস্যার সমাধান পেশ করা হয়েছে এ অংশে । মক্কায় বহু মুসলমান মহিলা ছিল যাদের স্বামীরা ছিল কাফের । এসব মহিলা কোন না কোন ভাবে হিজরত করে মদীনায় এসে হাজির হতো । অনুরূপ মদীনায় বহুসংখ্যক মুসলমান পুরুষ ছিল যাদের স্ত্রীরা ছিল কাফের এবং তারা মক্কাতেই রয়ে গিয়েছিল । এসব লোকের দাম্পত্য বন্ধন অক্ষুন্ন আছে কিনা এ বিষয়ে প্রশ্ন দেখা দিতো । আল্লাহ তাআলা এ বিষয়ে চিরদিনের জন্য ফায়সালা দিলেন যে, মুসলমান নারীর জন্য কাফের স্বামী হালাল নয় এবং মুসলমান পুরুষের জন্যও মুশরিক স্ত্রীকে বিবাহ বন্ধনে রাখা জায়েজ নয় । এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আইনগত ফলাফলের ধারক । পরে আমরা টীকাসমূহে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব ।

১২নং আয়াত হলো সূরাটি তৃতীয় অংশ । এতে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, জাহেলী যুগের আরব সমাজে যেসব বড় বড় দোষ-ত্রুটি ও গোনাহের কাজ নারী সমাজের মধ্যে বিস্তার লাভ করেছিল যেসব নারী ইসলাম গ্রহণ করবে তা থেকে মুক্ত থাকার জন্য তাদের থেকে প্রতিশ্রুতি নিতে হবে এবং এ বিষয়েও অঙ্গীকার নিতে হবে যে, আল্লাহর রসূলের পক্ষ থেকে ভবিষ্যতে যেসব কল্যাণ ও সুকৃতির পথ, পন্থা ও নিয়ম-কানুন মেনে চলার আদেশ দেয়া হবে তা তারা মেনে চলবে ।

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
আরবি উচ্চারণ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম বাংলা অনুবাদ পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি। يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا عَدُوِّي وَعَدُوَّكُمْ أَوْلِيَاءَ تُلْقُونَ إِلَيْهِمْ بِالْمَوَدَّةِ وَقَدْ كَفَرُوا بِمَا جَاءَكُمْ مِنَ الْحَقِّ يُخْرِجُونَ الرَّسُولَ وَإِيَّاكُمْ أَنْ تُؤْمِنُوا بِاللَّهِ رَبِّكُمْ إِنْ كُنْتُمْ خَرَجْتُمْ جِهَادًا فِي سَبِيلِي وَابْتِغَاءَ مَرْضَاتِي تُسِرُّونَ إِلَيْهِمْ بِالْمَوَدَّةِ وَأَنَا أَعْلَمُ بِمَا أَخْفَيْتُمْ وَمَا أَعْلَنْتُمْ وَمَنْ يَفْعَلْهُ مِنْكُمْ فَقَدْ ضَلَّ سَوَاءَ السَّبِيلِ 60.1 আরবি উচ্চারণ ৬০.১। ইয়া য় আইয়্যুহাল্ লাযীনা আ-মানূ লা-তাত্তাখিযূ ‘আদুওওয়ি অ ‘আদুওয়্যাকুম্ আওলিয়া-য়া তুল্ক্ব ক্রনা ইলাইহিম্ বিল্মাওয়াদ্দাতি অক্বদ্ কাফারূ বিমা- জ্বা-য়াকুম্ মিনাল্ হাক্ব ক্বি ইয়ুখ্রিজ্ব ক্রর্না রসূলা অইয়্যা-কুম্ আন্ তুমিনূ বিল্লা-হি রব্বিকুম্; ইন্ কুন্তুম্ খারজ্ব তুম্ জ্বিহা-দান্ ফী সাবীলী অবতিগ-য়া র্মাদ্বোয়া-তী তুর্সিরূনা ইলাইহিম্ বিল্ মাওয়াদ্দাতি অআনা আ‘লামু বিমা য় আখ্ফাইতুম্ অমা য় আ’লান্তুম্; অমাইঁ ইয়াফ্‘আল্হু মিন্কুম্ ফাক্বদ্ দ্বোয়াল্লা সাওয়া-য়াস্ সাবীল্। বাংলা অনুবাদ ৬০.১ হে ঈমানদারগণ, তোমরা আমার ও তোমাদের শত্রুদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে তাদের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করো না, অথচ তোমাদের কাছে যে সত্য এসেছে তা তারা অস্বীকার করেছে এবং রাসূলকে ও তোমাদেরকে বের করে দিয়েছে এজন্য যে, তোমরা তোমাদের রব আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছ। তোমরা যদি আমার পথে সংগ্রামে ও আমার সন্তুষ্টির সন্ধানে বের হও (তবে কাফিরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না) তোমরা গোপনে তাদের সাথে বন্ধুত্ব প্রকাশ কর অথচ তোমরা যা গোপন কর এবং যা প্রকাশ কর তা আমি জানি। তোমাদের মধ্যে যে এমন করবে সে সরল পথ হতে বিচ্যুত হবে। إِنْ يَثْقَفُوكُمْ يَكُونُوا لَكُمْ أَعْدَاءً وَيَبْسُطُوا إِلَيْكُمْ أَيْدِيَهُمْ وَأَلْسِنَتَهُمْ بِالسُّوءِ وَوَدُّوا لَوْ تَكْفُرُونَ60.2 আরবি উচ্চারণ ৬০.২। ইঁইয়াছ্ক্বফূকুম্ ইয়াকূনূ লাকুম্ আ’দা-য়াঁও অইয়াব্সুত্ব ক্র য় ইলাইকুম্ আইদিয়াহুম্ অআল্সিনাতাহুম্ বিস্ সূ-য়ি অওয়াদ্দ ক্রলাও তাক্ফুরূন্। বাংলা অনুবাদ ৬০.২ তারা যদি তোমাদেরকে বাগে (আয়ত্বে) পায় তবে তোমাদের শত্রু হবে এবং মন্দ নিয়ে তোমাদের দিকে তাদের হাত ও যবান বাড়াবে; তারা কামনা করে যদি তোমরা কুফরি করতে! لَنْ تَنْفَعَكُمْ أَرْحَامُكُمْ وَلَا أَوْلَادُكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَفْصِلُ بَيْنَكُمْ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ60.3 আরবি উচ্চারণ ৬০.৩। লান্ তান্ফা‘আকুম্ র্আহা-মুকুম্ অলা য় আওলাদুকুম্ ইয়াওমাল্ ক্বিয়া-মাতি ইয়াফ্ছিলু বাইনাকুম্; অল্লা-হু বিমা-তা’মালূনা বার্ছী। বাংলা অনুবাদ ৬০.৩ কিয়ামত দিবসে তোমাদের আত্মীয়তা ও সন্তান-সন্ততি তোমাদের কোন উপকার করতে পারবে না। তিনি তোমাদের মাঝে ফায়সালা করে দেবেন। তোমরা যা কর আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা। قَدْ كَانَتْ لَكُمْ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ فِي إِبْرَاهِيمَ وَالَّذِينَ مَعَهُ إِذْ قَالُوا لِقَوْمِهِمْ إِنَّا بُرَآءُ مِنْكُمْ وَمِمَّا تَعْبُدُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ كَفَرْنَا بِكُمْ وَبَدَا بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةُ وَالْبَغْضَاءُ أَبَدًا حَتَّى تُؤْمِنُوا بِاللَّهِ وَحْدَهُ إِلَّا قَوْلَ إِبْرَاهِيمَ إِلَّا قَوْلَ إِبْرَاهِيمَ لِأَبِيهِ لَأَسْتَغْفِرَنَّ لَكَ وَمَا أَمْلِكُ لَكَ مِنَ اللَّهِ مِنْ شَيْءٍ رَبَّنَا عَلَيْكَ تَوَكَّلْنَا وَإِلَيْكَ أَنَبْنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ60.4 আরবি উচ্চারণ ৬০.৪। ক্বদ্ কা-নাত্ লাকুম্ উস্ওয়াতুন্ হাসানাতুন্ ফী য় ইব্রা-হীমা অল্লাযীনা মা‘আহূ ইয্ ক্ব-লূ লিক্বওমিহিম্ ইন্না বুরয়া-য়ু মিন্কুম্ অমিম্মা-তা’বুদূনা মিন্ দূনিল্লা-হি কার্ফানা-বিকুম্ অবাদা বাইনানা- অবাইনাকুমুল্ ‘আদা-ওয়াতু অল্ বাগ্দ্বোয়া-য়ু আবাদান্ হাত্তা- তুমিনূ বিল্লা-হি অহ্দাহূ য় ইল্লা- ক্বওলা ইব্র-হীমা লিআবীহি লাআস্ তাগ্ফিরন্না লাকা অমা য় আম্লিকু লাকা মিনাল্লা-হি মিন্ শাইয়িন; রব্বানা-‘আলাইকা তাওয়াক্কাল্না-অইলাইকা আনাব্না-অইলাইকাল্ মার্ছী। বাংলা অনুবাদ ৬০.৪ ইবরাহিম ও তার সাথে যারা ছিল তাদের মধ্যে তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ। তারা যখন স্বীয় সম্প্রদায়কে বলছিল, ‘তোমাদের সাথে এবং আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা যা কিছুর উপাসনা কর তা হতে আমরা সম্পর্কমুক্ত। আমরা তোমাদেরকে অস্বীকার করি; এবং উদ্রেক হল আমাদের- তোমাদের মাঝে শত্রুতা ও বিদ্বেষ চিরকালের জন্য; যতক্ষণ না তোমরা এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আন। তবে স্বীয় পিতার প্রতি ইবরাহিমের উক্তিটি ব্যতিক্রম, ‘আমি অবশ্যই তোমার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করব আর তোমার ব্যাপারে আল্লাহর কাছে আমি কোন অধিকার রাখি না।’ হে আমাদের প্রতিপালক, আমরা আপনার ওপরই ভরসা করি, আপনারই অভিমুখী হই আর প্রত্যাবর্তন তো আপনারই কাছে। رَبَّنَا لَا تَجْعَلْنَا فِتْنَةً لِلَّذِينَ كَفَرُوا وَاغْفِرْ لَنَا رَبَّنَا إِنَّكَ أَنْتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ60.5 আরবি উচ্চারণ ৬০.৫। রব্বানা- লা- তাজ্ব ‘আল্না- ফিত্নাতাল্ লিল্লাযীনা কাফারূ অর্গ্ফিলানা-রব্বানা -ইন্নাকা আন্তাল্ ‘আযীযুল্ হাকীম্। বাংলা অনুবাদ ৬০.৫ হে আমাদের রব, আপনি আমাদেরকে কাফিরদেও উৎপীড়নের পাত্র বানাবেন না। হে আমাদের রব, আপনি আমাদের ক্ষমা করে দিন। নিশ্চয় আপনি মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِيهِمْ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِمَنْ كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ وَمَنْ يَتَوَلَّ فَإِنَّ اللَّهَ هُوَ الْغَنِيُّ الْحَمِيدُ60.6 আরবি উচ্চারণ ৬০.৬। লাক্বদ্ কা-না লাকুম্ ফী হিম্ উস্ওয়াতুন্ হাসানাতুল্ লিমান্ কা-না ইর্য়াজুল্লা-হা অল্ ইয়াওমাল্ আ-র্খি; অমাইঁ ইয়াতাওয়াল্লা-ফাইন্নাল্লা-হা হুওয়াল্ গানিইয়ুল্ হামীদ্। বাংলা অনুবাদ ৬০.৬ নিশ্চয় তোমাদের জন্য তাদের মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে, যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রত্যাশা করে, আর যে মুখ ফিরিয়ে নেয়, (সে জেনে রাখুক) নিশ্চয় আল্লাহ তো অভাবমুক্ত, সপ্রশংসিত। عَسَى اللَّهُ أَنْ يَجْعَلَ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ الَّذِينَ عَادَيْتُمْ مِنْهُمْ مَوَدَّةً وَاللَّهُ قَدِيرٌ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَحِيمٌ 60.7 আরবি উচ্চারণ ৬০.৭। ‘আসাল্লা-হু আইঁ ইয়াজ্ব ‘আলা বাইনাকুম্ অবাইনাল্ লাযীনা ‘আদাইতুম্ মিন্হুম্ মাওয়াদ্দাহ্; অল্লা-হু ক্বার্দী; অল্লা-হু গফূর্রু রহীম্। বাংলা অনুবাদ ৬০.৭ যাদের সাথে তোমরা শত্রুতা করছ, আশা করা যায় আল্লাহ তোমাদের ও তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব সৃষ্টি করে দেবেন। আর আল্লাহ সর্ব শক্তিমান এবং আল্লাহ অতিশয় ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। لَا يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ لَمْ يُقَاتِلُوكُمْ فِي الدِّينِ وَلَمْ يُخْرِجُوكُمْ مِنْ دِيَارِكُمْ أَنْ تَبَرُّوهُمْ وَتُقْسِطُوا إِلَيْهِمْ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِينَ60.8 আরবি উচ্চারণ ৬০.৮। লা-ইয়ান্হা-কুমুল্লা-হু ‘আনিল্ লাযীনা লাম্ ইয়ুক্ব-তিলূকুম্ ফিদ্দীনি অলাম্ ইয়ুখ্রিজ্ব ক্রকুম্ মিন্ দিয়া-রিকুম্ আন্ তার্বারূহুম্ অতুক্ব সিত্ব ক্র য় ইলাইহিম্; ইন্নাল্লা-হা ইয়ুহিব্বুল্ মুক্ব সিত্বীন্। বাংলা অনুবাদ ৬০.৮ দীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে তোমাদের বাড়ি-ঘর থেকে বের করে দেয়নি, তাদের প্রতি সদয় ব্যবহার করতে এবং তাদের প্রতি ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করছেন না। নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায় পরায়ণদেরকে ভালবাসেন। إِنَّمَا يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ قَاتَلُوكُمْ فِي الدِّينِ وَأَخْرَجُوكُمْ مِنْ دِيَارِكُمْ وَظَاهَرُوا عَلَى إِخْرَاجِكُمْ أَنْ تَوَلَّوْهُمْ وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ60.9 আরবি উচ্চারণ ৬০.৯। ইন্নামা-ইয়ান্হা-কুমুল্লা-হু ‘আনিল্ লাযীনা ক্ব-তালূকুম্ ফিদ্দীনি অ আখ্রাজ্ব ক্র কুম্ মিন্ দিয়া-রিকুম্ অজোয়া- হারূ ‘আলা য় ইখ্র-জ্বিকুম্ আন্ তাওয়াল্লাওহুম্ অমাইঁ ইয়া তাওয়াল্লাহুম্ ফাউলা-য়িকা হুমুজ্ জোয়া-লিমূন্। বাংলা অনুবাদ ৬০.৯ আল্লাহ কেবল তাদের সাথেই বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেছেন, যারা দীনের ব্যাপারে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে এবং তোমাদেরকে তোমাদের ঘরবাড়ী থেকে বের করে দিয়েছে ও তোমাদেরকে বের করে দেয়ার ব্যাপারে সহায়তা করেছে। আর যারা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করে, তারাই তো যালিম। يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا جَاءَكُمُ الْمُؤْمِنَاتُ مُهَاجِرَاتٍ فَامْتَحِنُوهُنَّ اللَّهُ أَعْلَمُ بِإِيمَانِهِنَّ اللَّهُ أَعْلَمُ بِإِيمَانِهِنَّ فَإِنْ عَلِمْتُمُوهُنَّ مُؤْمِنَاتٍ فَلَا تَرْجِعُوهُنَّ إِلَى الْكُفَّارِ لَا هُنَّ حِلٌّ لَهُمْ وَلَا هُمْ يَحِلُّونَ لَهُنَّ وَآتُوهُمْ مَا أَنْفَقُوا وَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ أَنْ تَنْكِحُوهُنَّ إِذَا آتَيْتُمُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ وَلَا تُمْسِكُوا بِعِصَمِ الْكَوَافِرِ وَاسْأَلُوا مَا أَنْفَقْتُمْ وَلْيَسْأَلُوا مَا أَنْفَقُوا ذَلِكُمْ حُكْمُ اللَّهِ يَحْكُمُ بَيْنَكُمْ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ 60.10 আরবি উচ্চারণ ৬০.১০। ইয়া য় আইয়ুহাল্ লাযীনা আ-মানূ য় ইযা-জ্বা-য়াকুমুল্ মুমিনা-তু মুহা-জ্বির-তিন্ ফাম্তাহিনূহুন্ন্; আল্লা-হু আ’লামু বিঈমা-নিহিন্না ফাইন্ ‘আলিম্ তুমূহুন্না মুমিনা-তিন্ ফালা-র্তাজ্বি‘ঊ হুন্না ইলাল্ কুফ্ফার্-; লা-হুন্না হিল্লুল্লাহুম্ অলা-হুম্ ইয়াহিল্লূনা লাহুন্; অআ-তূহুম্ মা য় আন্ফাক্ব ক্র; অলা-জ্ব ক্রনা-হা ‘আলাইকুম্ আন্ তান্কিহূহুন্না ইযা য় আ-তাইতুমূ হুন্না উজ্ব ক্ররহুন্না; অলা-তুম্সিকূ বিই’ছোয়ামিল্ কাওয়া-ফিরি অস্য়ালূ মা য় আন্ফাক্ব তুম্ অল্ ইয়াস্য়ালূ মা য় আন্ফাক্ব ক্র; যা-লিকুম্ হুক্মুল্লা-হ্ ইয়াহ্কুমু বাইনাকুম্; অল্লা-হু ‘আলীমুন্ হাকীম্। বাংলা অনুবাদ ৬০.১০ হে ঈমানদারগণ, তোমাদের কাছে মুমিন মহিলারা হিজরত করে আসলে তোমরা তাদেরকে পরীক্ষা করে দেখ। আল্লাহ তাদের ঈমান সম্পর্কে অধিক অবগত। অতঃপর যদি তোমরা জানতে পার যে, তারা মুমিন মহিলা, তাহলে তাদেরকে আর কাফিরদের নিকট ফেরত পাঠিও না। তারা কাফিরদের জন্য বৈধ নয় এবং কাফিররাও তাদের জন্য হালাল নয়। তারা যা ব্যয় করেছে, তা তাদেরকে ফিরিয়ে দাও। তোমরা তাদেরকে বিয়ে করলে তোমাদের কোন অপরাধ হবে না, যদি তোমরা তাদেরকে তাদের মোহর প্রদান কর। আর তোমরা কাফির নারীদের সাথে বৈবাহিক সম্পকর্ বজায় রেখ না, তোমরা যা ব্যয় করেছ, তা তোমরা ফেরত চাও, আর তারা যা ব্যয় করেছে, তা যেন তারা চেয়ে নেয়। এটা আল্লাহর বিধান। তিনি তোমাদের মাঝে ফয়সালা করেন। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। وَإِنْ فَاتَكُمْ شَيْءٌ مِنْ أَزْوَاجِكُمْ إِلَى الْكُفَّارِ فَعَاقَبْتُمْ فَآتُوا الَّذِينَ ذَهَبَتْ أَزْوَاجُهُمْ مِثْلَ مَا أَنْفَقُوا وَاتَّقُوا اللَّهَ الَّذِي أَنْتُمْ بِهِ مُؤْمِنُونَ60.11 আরবি উচ্চারণ ৬০.১১। অইন্ ফা-তাকুম্ শাইয়ুম্ মিন্ আয্ওয়া-জ্বিকুম্ ইলাল্ কুফ্ফা-রি ফা‘আ-ক্বব্তুম্ ফা‘আ- তুল্লাযীনা যাহাবাত্ আয্ওয়া-জুহুম্ মিছ্লা মা য় আন্ফাক্ব ক্র; অত্তাকুল্লা হাল্লাযী য় আন্তুম্ বিহী মু”মিনূন্। বাংলা অনুবাদ ৬০.১১ আর তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যদি কেউ হাতছাড়া হয়ে কাফিরদের নিকট চলে যায়, অতঃপর যদি তোমরা যুদ্ধজয়ী হয়ে গনিমত লাভ কর, তাহলে যাদের স্ত্রীরা চলে গেছে, তাদেরকে তারা যা ব্যয় করেছে, তার সমপরিমাণ প্রদান কর। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যার প্রতি তোমরা বিশ্বাসী। يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِذَا جَاءَكَ الْمُؤْمِنَاتُ يُبَايِعْنَكَ عَلَى أَنْ لَا يُشْرِكْنَ بِاللَّهِ شَيْئًا وَلَا يَسْرِقْنَ وَلَا يَزْنِينَ وَلَا يَقْتُلْنَ أَوْلَادَهُنَّ وَلَا يَأْتِينَ بِبُهْتَانٍ يَفْتَرِينَهُ بَيْنَ أَيْدِيهِنَّ وَأَرْجُلِهِنَّ وَلَا يَعْصِينَكَ فِي مَعْرُوفٍ فَبَايِعْهُنَّ وَاسْتَغْفِرْ لَهُنَّ اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ 60.12 আরবি উচ্চারণ ৬০.১২। ইয়া য় আইয়্যুহান্ নাবিয়্যু ইযা-জ্বা-য়াকাল্ মু”মিনা-তু ইয়ুবা-ইয়ি’নাকা ‘আলা য় আল্লা-ইয়ুশ্রিক্না বিল্লা-হি শাইয়াঁও অলা-ইয়াস্রিক্ব না অলা ইয়ায্নীনা অলা-ইয়াক্ব তুল্না আওলা-দাহুন্না অলা-ইয়া”তীনা বিবুহ্তা-নিঁ ইয়াফ্তারীনাহূ বাইনা আইদীহিন্না অ র্আজুলিহিন্না অলা- ইয়া’ছীনাকা ফী মা’রূফিন্ ফাবা-য়িয়ি’হুন্না অস্তার্গ্ফি লাহুন্নাল্ লা-হ্ ; ইন্নাল্লা-হা গাফূর্রু রহীম্। বাংলা অনুবাদ ৬০.১২ হে নবী, যখন মুমিন নারীরা তোমার কাছে এসে এই মর্মে বাইআত করে যে, তারা আল্লাহর সাথে কোন কিছু শরীক করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচার করবে না, নিজেদের সন্তানদেরকে হত্যা করবে না, তারা জেনে শুনে কোন অপবাদ রচনা করে রটাবে না এবং সৎকাজে তারা তোমার অবাধ্য হবে না। তখন তুমি তাদের বাইআত গ্রহণ কর এবং তাদের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর। নিশ্চয় আল্লাহ অতিশয় ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَوَلَّوْا قَوْمًا غَضِبَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ قَدْ يَئِسُوا مِنَ الْآخِرَةِ كَمَا يَئِسَ الْكُفَّارُ مِنْ أَصْحَابِ الْقُبُورِ 60.13 আরবি উচ্চারণ ৬০.১৩। ইয়া য় আইয়্যুহাল্লাযীনা আ-মানূ লা-তাতাঅল্লাও ক্বওমান্ গাদ্বিবাল্ লাহু ‘আলাইহিম্ ক্বদ্ ইয়ায়িসূ মিনাল্ আ-খিরতি কামা-ইয়ায়িসাল্ কুফ্ফা-রু মিন্ আছ্হা-বিল্ কুবূর্ । বাংলা অনুবাদ ৬০.১৩ হে ঈমানদারগণ, তোমরা সেই সম্প্রদায়ের সাথে বন্ধুত করো না, যাদের প্রতি আল্লাহ রাগান্বিত হয়েছেন। তারা তো আখিরাত সম্পর্কে নিরাশ হয়ে পড়েছে, যেমনিভাবে কাফিররা কবরবাসীদের সম্পর্কে নিরাশ হয়েছে।

About Abdul Latif Sheikh

Check Also

idf image

সুরা আল ইমরান আয়াত ১০২-১০৫ এর তাফসির

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللّٰهَ حَقَّ تُقٰتِهٖ وَ لَا تَمُوۡتُنَّ اِلَّا وَ اَنۡتُمۡ مُّسۡلِمُوۡنَ  وَ …

সুরা ইখলাস এর ফযিলত

সুরা আন আনফাল

সুরা আন আনফাল নামের অর্থঃ যুদ্ধ লব্ধ সম্পদ শ্রেনীঃ মাদানী সুরা ক্রমঃ ৮ আয়াত সংখ্যাঃ …

সুরা ইখলাস এর ফযিলত

সূরা আত-তাওবাহ্‌

সূরা আত-তাওবাহ্‌ শ্রেণীঃ মাদানীনামের অর্থঃ অনুশোচনাঅন্য নামঃ আল-বারাহ্ (শাস্তি থেকে অব্যাহতি) সূরার ক্রমঃ ৯আয়াতের সংখ্যাঃ …

Leave a Reply

Your email address will not be published.