সুরা আল-বালাদ
শ্রেণীঃ মাক্কী সূরা
নামের অর্থঃ নগর
অন্য নামঃ স্বদেশ, ভূমি
সূরার ক্রমঃ ৯০
আয়াতের সংখ্যাঃ ২০
পারার ক্রমঃ ৩০
রুকুর সংখ্যাঃ ১
সিজদাহ্র সংখ্যাঃ নেই
← পূর্ববর্তী সূরা সূরা আল-ফাজ্র
পরবর্তী সূরা → সূরা আশ-শাম্স
নামকরণঃ
এই সূরাটির প্রথম আয়াতের َآ اٌقْسِمُ بِهآذَا الْبَلَدِ বাক্যাংশের الْبَلَدِ শব্দটি অনুসারে এই সূরার নামটি গৃহীত হয়েছে; অর্থাৎ, যে সূরার মধ্যে البلد (‘বালাদ’) শব্দটি আছে এটি সেই সূরা।[১]
নাযিল হওয়ার সময় ও স্থান
বিষয়বস্তু ও লেখনী থেকে ধারণা করা যায় এই সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ প্রথম সূরাগুলোর একটি। তবে সূরাটিতে এমন ইঙ্গিত পাওয়া যায় যা থেকে মনে হয় এটি এমন এক সময়ে নাযিল হয়েছিল যখন মক্কার অবিশ্বাসী গোষ্ঠীভুক্ত মানুষেরা মুহাম্মদের (সা.) বিরুদ্ধে তাদের বিরোধ ঘোষণা করেছিল এবং তার উপর অত্যাচার করাকে আইণতঃ সিদ্ধ বলে স্থাপন করে নিয়েছিল।
শানে নুযূলঃ
সাইয়ীদ আবুল আল মওদুদি (মৃত্যু ১৯৭৯) বর্ণিত তাফসীর তাফহিম আল-কুরআনে উল্লেখ রয়েছে, এই সুরার মূল উদ্দেশ্য পৃথিবীতে মানুষের প্রকৃত অবস্থান সম্পর্কে বর্ণনা দেওয়া। আর এ কথা জানানো যে, সৃষ্টিকর্তা মানুষের সামনে ভালো ও খারাপ দুই পথের দিশা দেখিয়েছেন এবং কোন পথটি সঠিক এবং অনুসরণীয় সেটি বিবেচনা করার ক্ষমতা প্রদান করেছেন। এখন এটি মানুষের সিদ্ধান্ত যে সে কোন পথটি বেছে নেবে। সে কি সৎকর্ম করে প্রকৃত সুখী হবে নাকি অপকর্মে লিপ্ত হয়ে ধ্বংসের পথে অগ্রসর হবে।
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ
বিসমিল্লা-হির রাহমা-নির রাহিম
لا أُقْسِمُ بِهَذَا الْبَلَدِ (١)
1. লা~ উক্ব সিমু বিহা-যাল বালাদ।
আমি এই নগরীর শপথ করি
وَأَنْتَ حِلٌّ بِهَذَا الْبَلَدِ (٢)
2. অআনতা হিল্লু ম বিহা-যাল বালাদ।
এবং এই নগরীতে আপনার উপর কোন প্রতিবন্ধকতা নেই।
وَوَالِدٍ وَمَا وَلَدَ (٣)
3. অওয়া-লিদিঁও অমা-অলাদ।
শপথ জনকের ও যা জন্ম দেয়।
لَقَدْ خَلَقْنَا الإنْسَانَ فِي كَبَدٍ (٤)
4. লাক্বাদ খলাক্ব নাল ইনসা-না ফী কাবাদ।
নিশ্চয় আমি মানুষকে শ্রমনির্ভররূপে সৃষ্টি করেছি।
أَيَحْسَبُ أَنْ لَنْ يَقْدِرَ عَلَيْهِ أَحَدٌ (٥)
5. আ ইয়াহসাবু আল্লাইঁ ইয়াক্ব দিরা ‘আলাইহি আহাদ।
সে কি মনে করে যে, তার উপর কেউ ক্ষমতাবান হবে না ?
يَقُولُ أَهْلَكْتُ مَالا لُبَدًا (٦)
6. ইয়াক্বূ লু আহলাকতু মা-লা ল্লুবাদা-।
সে বলেঃ আমি প্রচুর ধন-সম্পদ ব্যয় করেছি।
أَيَحْسَبُ أَنْ لَمْ يَرَهُ أَحَدٌ (٧)
7. আইয়াহসাবু আল্লাম ইয়ারাহূ~ আহাদ।
সে কি মনে করে যে, তাকে কেউ দেখেনি?
أَلَمْ نَجْعَلْ لَهُ عَيْنَيْنِ (٨)
8. আলাম নাজ্ব ‘আল লাহূ ‘আইনাইনি।
আমি কি তাকে দেইনি চক্ষুদ্বয়,
وَلِسَانًا وَشَفَتَيْنِ (٩)
9. অলিসা নাওঁ অশাফাতাইনি।
জিহবা ও ওষ্ঠদ্বয় ?
وَهَدَيْنَاهُ النَّجْدَيْنِ (١٠)
10. অহাদাইনা-হু ন্নাজ্ব দাইন।
বস্তুতঃ আমি তাকে দু’টি পথ প্রদর্শন করেছি।
فَلا اقْتَحَمَ الْعَقَبَةَ (١١)
11. ফালাক্ব তাহামাল আ’ক্ববাহ।
অতঃপর সে ধর্মের ঘাঁটিতে প্রবেশ করেনি।
وَمَا أَدْرَاكَ مَا الْعَقَبَةُ (١٢)
12. অমা~ আদর-কা মাল ‘আক্ববাহ।
আপনি জানেন, সে ঘাঁটি কি?
فَكُّ رَقَبَةٍ (١٣)
13. ফাক্কু রক্ববাতিন।
তা হচ্ছে দাসমুক্তি
أَوْ إِطْعَامٌ فِي يَوْمٍ ذِي مَسْغَبَةٍ (١٤)
14. আও ইত্ব ‘আ-মুন ফী ইয়াওমিন যী মাসগাবাতিঁই।
অথবা দুর্ভিক্ষের দিনে অন্নদান।
يَتِيمًا ذَا مَقْرَبَةٍ (١٥)
15. ইয়াতীমান যা-মাক্ব রবাতিন।
এতীম আত্বীয়কে
أَوْ مِسْكِينًا ذَا مَتْرَبَةٍ (١٦)
16. আও মিসকীনান যা-মাতরবাহ।
অথবা ধুলি-ধুসরিত মিসকীনকে
ثُمَّ كَانَ مِنَ الَّذِينَ آمَنُوا وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ وَتَوَاصَوْا بِالْمَرْحَمَةِ (١٧)
17. ছুম্মা কা-না মিনাল্লাযীনা আ-মানূ অতাওয়া ছোয়াও বিছছোয়াবরি অতাওয়া ছোয়াওবিল মারহামাহ।
অতঃপর তাদের অন্তর্ভুক্ত হওয়া, যারা ঈমান আনে এবং পরস্পরকে উপদেশ দেয় সবরের ও উপদেশ দেয় দয়ার।
أُولَئِكَ أَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ (١٨)
18. উলা–য়িকা আছহাবুল মাইমানাহ।
তারাই সৌভাগ্যশালী।
وَالَّذِينَ كَفَرُوا بِآيَاتِنَا هُمْ أَصْحَابُ الْمَشْأَمَةِ (١٩)
19. অল্লাযীনা কাফারূ বিআ-ইয়া-তিনা-হুম আছহা-বুল মাশয়ামাহ।
আর যারা আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করে তারাই হতভাগা।
عَلَيْهِمْ نَارٌ مُؤْصَدَةٌ (٢٠)
20. ‘আলাইহিম না-রুম মু”ছোয়াদাহ।
তারা অগ্নিপরিবেষ্টিত অবস্থায় বন্দী থাকবে।