Monday , October 14 2024

সুরা আদ-দুহা

সুরা আদ-দুহা

শ্রেণীঃ মক্কী সূরা

সূরার ক্রমঃ ৯৩
আয়াতের সংখ্যাঃ ১১
পারার ক্রমঃ ৩০
রুকুর সংখ্যাঃ ১

← পূর্ববর্তী সূরা সূরা আল-লাইল
পরবর্তী সূরা → সূরা আল-ইনশিরাহ

নামকরণ :

সূরার প্রথম শব্দ ওয়াদদুহা ( আরবী ————) কে এই সূরার নাম হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।

নাযিলের সময় – কাল

এই সূরার বক্তব্য বিষয় থেকে একথা পুরোপুরি সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে , এটি মক্কা মু’ আযযমার প্রথম যুগে নাযিল হয়। হাদীস থেকে ও জানা যায় , কিছুদিন অহীর অবতরণ বন্ধ ছিল। এ জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অত্যন্ত অস্থির হয়ে পড়েছিলেন। বারবার তাঁর মনে এই আশংকার উদয় হচ্ছিল , হয়তো তাঁর এমন কোন ক্রুটি হয়ে গেছে যার ফলে তাঁর রব তাঁর প্রতি নারাজ হয়ে গেছেন এবং তাঁকে পরিত্যাগ করেছেন। এ জন্য তাঁকে সান্ত্বনা দিয়ে বলা হয়েছে , কোন প্রকার অসন্তুষ্টির কারণে অহীর সিলসিলা বন্ধ করা হয়নি। বরং এর পেছনে সেই একই কারণ সক্রিয় ছিল যা আলোকোজ্জ্বল দিনের পরে রাতের নিস্তব্ধতা এ প্রশান্তি ছেয়ে যাবার মধে সক্রিয় থাকে। অর্থাৎ অহীর প্রখর কিরণ। যদি একনাগাড়ে তাঁর প্রতি বর্ষিত হতো তাহলে তাঁর স্নায়ু তা বরদাশত করতে পারতো না । তাই মাঝখানে বিরতি দেয়া হয়েছে । তাঁকে আরাম ও প্রশান্তি দান করাই এর উদ্দেশ্য । নবুওয়াতের প্রাথমিক যুগে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই অবস্থার মুখোমুখি হন। সে সময় অহী নাযিলের কষ্ট বরদাশত করার অভ্যাস তাঁর গড়ে ওঠেনি। তাই মাঝে মাঝে ফাঁক দেবার প্রয়োজন ছিল। সূরা মুদদাসসির এর ভূমিকায় আমি একথা সুস্পষ্টভাবে আলোচনা করেছি। আর অহী নাযিলের সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্নায়ুর ওপর এর কী গভীর প্রভাব পড়তো তা আমি সূরা মুয্‌যাম্মিলের ৫ টীকায় বলেছি। পরে তাঁর মধ্যে এই মহাভার বরদাশত করার ক্ষমতা সৃষ্টি হয়ে গেলে আর দীর্ঘ ফাঁক দেবার প্রয়োজন থাকেনি।

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
وَالضُّحَىٰ
অদ্ব্দ্বুহা

উজ্জ্বল দিনের কসম।
وَاللَّيْلِ إِذَا سَجَىٰ
অল্লাইলি ইযা- সাজ্বা

এবং রাতের কসম যখন তা নিঝুম হয়ে যায়।
مَا وَدَّعَكَ رَبُّكَ وَمَا قَلَىٰ
মা অদ্দা‘আকা রব্বুকা অমা- ক্বলা

(হে নবী !) তোমার রব তোমাকে কখনো পরিত্যাগ করেননি এবং তোমার প্রতি অসন্তুষ্টও হননি।
وَلَلْآخِرَةُ خَيْرٌ لَّكَ مِنَ الْأُولَىٰ
অলাল্ আ-খিরাতু খাইরুল্লাকা মিনাল্ ঊলা

নিসন্দেহে তোমার জন্য পরবর্তী যুগ পূর্ববর্তী যুগের চেয়ে ভালো।

وَلَسَوْفَ يُعْطِيكَ رَبُّكَ فَتَرْضَىٰ
অলাসাওফা ইয়ু’ত্বীকা রব্বুকা ফার্তাদ্বোয়া

আর শীঘ্রই তোমার রব তোমাকে এত দেবেন যে , তুমি খুশী হয়ে যাবে।
أَلَمْ يَجِدْكَ يَتِيمًا فَآوَىٰ
আলাম্ ইয়াজ্বিদ্কা ইয়াতীমান্ ফাআ-ওয়া

তিনি কি তোমাকে এতিম হিসেবে পাননি? তারপর তোমাকে আশ্রয় দেননি?
وَوَجَدَكَ ضَالًّا فَهَدَىٰ
অওয়াজ্বাদাকা দ্বোয়া-ল্লান্ ফাহাদা

তিনি তোমাকে পথ না পাওয়া অবস্থায় পান, তারপর তিনিই পথ দেখান।
وَوَجَدَكَ عَائِلًا فَأَغْنَىٰ
অওয়াজ্বাদাকা ‘আ-য়িলান্ ফাআগ্না

তিনি তোমাকে নিঃস্ব অবস্থায় পান, তারপর তোমাকে ধনী করেন।

فَأَمَّا الْيَتِيمَ فَلَا تَقْهَرْ
ফাআম্মাল্ ইয়াতীমা ফালা-তাক্বরর্হা

কাজেই এতিমের প্রতি কঠোর হয়ো না।
وَأَمَّا السَّائِلَ فَلَا تَنْهَرْ
অআম্মাস্ সা-য়িলা ফালা-তার্ন্হা

প্রার্থীকে তিরস্কার করো না।
وَأَمَّا بِنِعْمَةِ رَبِّكَ فَحَدِّثْ
অ আম্মা-বিনি’মাতি রব্বিকা ফাহাদ্দিছ্

আর নিজের রবের নিয়ামত প্রকাশ করো।

About Abdul Latif Sheikh

Check Also

সুরা ফাতিহা আয়াত ২ এর তাফসীর

সুরা ফাতিহা আয়াত ২ ১:২ اَلۡحَمۡدُ لِلّٰهِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ (২) সমস্ত প্রশংসা সারা জাহানের প্রতিপালক আল্লাহর …

বিসমিল্লাহ এর নাম ও ইতিহাস জানুন

১:১ بِسۡمِ اللّٰهِ الرَّحۡمٰنِ الرَّحِیۡمِ ১. রহমান, রহীম আল্লাহর নামে। ১. সাধারণত আয়াতের অনুবাদে বলা হয়ে …

কুরআন তেলাওয়াত এর পূর্বে কি পড়তে হয়

কুরআন তেলাওয়াত এর পূর্বে পড়তে হয় أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ অর্থ: বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *