১:১ بِسۡمِ اللّٰهِ الرَّحۡمٰنِ الرَّحِیۡمِ
১. রহমান, রহীম আল্লাহর নামে।
১. সাধারণত আয়াতের অনুবাদে বলা হয়ে থাকে, পরম করুণাময়, দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি। ‘বিসমিল্লাহ’র পূর্বে ‘আক্বরাউ’ ‘আবদাউ’ অথবা ‘আতলু’ ফে’ল (ক্রিয়া) উহ্য আছে। অর্থাৎ, আল্লাহর নাম নিয়ে পড়ছি অথবা শুরু করছি কিংবা তেলাঅত আরম্ভ করছি। প্রথমে লক্ষণীয় যে, আয়াতে আল্লাহর নিজস্ব গুণবাচক নামসমূহের মধ্য হতে ‘আর-রাহমান ও আর-রাহীম’ এ দু’টি নামই এক স্থানে উল্লিখিত হয়েছে। ‘রহম’ শব্দের অর্থ হচ্ছে দয়া, অনুগ্রহ। এই ‘রহম’ ধাতু হতেই ‘রহমান’ ও ‘রহীম’ শব্দদ্বয় নির্গত ও গঠিত হয়েছে। রহমান শব্দটি মহান আল্লাহর এমন একটি গুণবাচক নাম যা অন্য কারও জন্য ব্যবহার করা জায়েয নেই।
বিসমিল্লাহ এর নাম হচ্ছে, তাসমিয়া এর আরো একটি নাম পাওয়া যায় তা হলো বাসমালা
সর্বপ্রথম ‘বিসমিল্লাহ’র ব্যবহার
তবে এই ‘বিসমিল্লাহ’র ব্যবহার কবে থেকে শুরু হলো, আমরা এখন তা জানব। প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ইবনু আবু আসেম আশ-শায়বানি তার ‘কিতাবুল আওয়ায়েল’ গ্রন্থে লিখেছেন, সর্বপ্রথম বিসমিল্লাহ লেখার প্রচলন শুরু করেন আল্লাহর নবী হজরত সুলাইমান আ:। তিনি তখন সমগ্র পৃথিবীর শাসক। এ সময় ইয়েমেনের সাবা নগরী শাসন করতেন রানি বিলকিস। রানি ও তার অধীনরা আল্লাহর পরিবর্তে সূর্যের ইবাদত করত। হজরত সুলাইমান আ: তখন রানিকে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে একটি পত্র লিখলেন। পত্র শুরু করেছিলেন ‘বিসমিল্লাহ’র মাধ্যমে।
আর এভাবেই ‘বিসমিল্লাহ’র প্রচলন শুরু হয়। কুরআনের বর্ণনায়, ‘সে (রানি) বলল, হে প্রধান ব্যক্তিরা, আমার সামনে একটি সম্মানিত পত্র পেশ করা হয়েছে। এটি সুলাইমানের পক্ষ থেকে এবং এটি করুণাময় ও দয়াবান আল্লাহর নামে (বিসমিল্লাহর মাধ্যমে)।’ (সূরা নামল, আয়াত: ২৯, ৩০)
মহানবী সা:-এর যুগে ‘বিসমিল্লাহ’
হজরত সুলাইমান আ:-এর পর রাসূল সা: ছাড়া আর কোনো নবীকেই বিসমিল্লাহর বিধান দেয়া হয়নি। প্রাথমিক যুগে রাসূল সা: ‘বিসমিকাল্লাহুম্মা’ লিখতেন। তারপর সূরা হুদের ৪১তম আয়াতে ‘বিসমিল্লাহি মাজরেহা’ নাজিল হলে তিনি শুধু ‘বিসমিল্লাহ’ লিখতে শুরু করেন। এরপর সুরা বনি ইসরাইলের ১০ নম্বর আয়াতে ‘কুলিদ উল্লাহা আওয়িদ উর রাহমান’ অবতীর্ণ হলে তিনি ‘বিসমিল্লাহির রহমান’ লিখতে থাকেন। এরপর সূরা নামলের ৩০তম আয়াতে পুরো ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম’ নাজিল হলে মহানবী সা: ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম’ লেখার প্রচলন করেন। (রুহুল মাআনি ও আহকামুল কুরআন লিল-জাসসাস)