Tuesday , April 30 2024

সূরা আল ইখলাসের ফজীলত

সূরা আল ইখলাসের ফাযীলাত সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো, আনাস ইবনু মালিক (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, কুবা মাসজিদে আনসার সম্প্রদায়ের এক লোক তাদের ইমামতি করতেন। তিনি নামাযে সূরা আল-ফাতিহার পর কোন সূরা পাঠ করার ইচ্ছা করলে প্রথমে সূরা কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ পাঠ করতেন এবং এ সূরা শেষ করার পর এর সাথে অন্য সূরা পাঠ করতেন। তিনি প্রতি রাকাআতেই এরূপ করতেন।*

*তার সাথীরা তার সাথে এ ব্যাপারে আলোচনা করে বললেন, আপনি এ সূরাটি পাঠ করার পর মনে করেন যে, এটা বুঝি যথেষ্ট হয়নি, তাই এর সাথে অন্য আরেকটি সূরাও পাঠ করেন। আপনি হয় এ সূরাটিই পাঠ করবেন, না হয় এটা বাদ দিয়ে অন্য কোন সূরা পাঠ করবেন। তিনি বললেন, আমি এ সূরা বাদ দিতে পারব না।

যদি তোমাদের পছন্দ হয় তবে আমি এ সূরাসহ ইমামতি করি, আর পছন্দ না হলে ইমামতি ছেড়ে দেই। কিন্তু তাদের দৃষ্টিতে তিনি ছিলেন তাদের মধ্যে সবচাইতে উত্তম ব্যক্তি। তাই তাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে ইমাম বানাতে তারা সম্মত হলেন না।*

*পরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের নিকট এলে তারা বিষয়টি তাকে জানালেন। তিনি বললেনঃ হে অমুক! তোমার সাথীরা তোমাকে যে নির্দেশ দিচ্ছে তা পালন করতে তোমাকে কিসে বাধা দিচ্ছে? আর তোমাকে প্রতি রাকআতে এ সূরা পাঠ করতে কিসে উদ্বুদ্ধ করছে? তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি এটি খুব ভালোবাসি। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এর প্রতি তোমার ভালোবাসাই তোমাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে।*

*হাসান সহীহঃ তা’লীকুর রাগীব (২/২৪৪), সিফাতুস সালাত (৮৫), বুখারী মু’আল্লাক হিসেবে বর্ণনা করেছেন।*

*আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ এবং উবাইদুল্লাহ ইবনু উমার-সাবিত আল-বুনানী সূত্রে বর্ণিত হাদীস হিসেবে গারীব। মুবারাক ইবনু ফাযালা-সাবিত আল-বুনানী হতে আনাস (রাযিঃ) এর বরাতে বর্ণনা করেছেন যে, “একজন লোক বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ সূরাটিকে ভালোবাসি। তিনি বললেনঃ তোমার এই ভালোবাসাই তোমাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে”।*

*পূর্বের হাদীসের সহায়তায় সহীহ।*

*হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)*

=========
*গ্রন্থঃ সূনান আত তিরমিজী [তাহকীককৃত]*
*অধ্যায়ঃ ৪২/ কুরআনের ফাযীলাত
*হাদিস নম্বরঃ ২৮৯৭*

*সূরা আল-ইখলাসের ফাযীলাত*

আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে আসছিলাম। তখন তিনি এক ব্যক্তিকে “কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ, আল্লাহুস সামাদ” পাঠ করতে শুনলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ওয়াজিব (অবধারিত) হয়ে গেছে। আমি প্রশ্ন করলাম, কি ওয়াজিব হয়ে গেছে? তিনি বললেনঃ জান্নাত।*

*সহীহঃ আত্তা’লীক (২/২২৪)।*

*আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা এ হাদীস শুধুমাত্র মালিক ইবনু আনাস (রাহঃ)-এর সূত্রে জেনেছি। ইবনু হুনাইন হলেন উবাইদ ইবনু হুনাইন।*

*হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)*
==========

সুরা ইখলাস এর ফযিলত
*গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ)*
*অধ্যায়ঃ ৬৬/ আল-কুরআনের ফাযীলাতসমূহ (كتاب فضائل القرآن)*
*হাদিস নম্বরঃ ৫০১৩*

৬৬/১৩. কুলহু আল্লাহু আহাদ (সূরাহ ইখলাস)-এর ফাযীলাত।
আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, এক ব্যক্তি আরেক ব্যক্তিকে ‘কুল হুআল্লাহু আহাদ’ পড়তে শুনলেন। সে বার বার তা মুখে উচ্চারণ করছিল। পরদিন সকালে তিনি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে এ ব্যাপারে বললেন।

যেন ঐ ব্যক্তি তাকে কম মনে করলেন। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সেই সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার জীবন। এ সূরাহ হচ্ছে সমগ্র কুরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান। [৬৬৪৩, ৭৩৭৪] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৪১, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৬৪৫)
——————-
গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৬৬/ আল-কুরআনের ফাযীলাতসমূহ (كتاب فضائل القرآن)
হাদিস নম্বরঃ ৫০১৪

৫০১৪. আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) বললেনঃ আমার ভাই ক্বাতাদাহ ইবনু নু‘মান আমাকে বলেছেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জীবদ্দশায় এক ব্যক্তি শেষ রাতে সালাতে ‘‘কুল হুআল্লাহু আহাদ’’ ব্যতীত আর কোন সূরাই তিলাওয়াত করেননি। পরদিন সকালে লোকটি নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে আসলেন। বাকী অংশ আগের হাদীসের মত। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৪১, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৬৪৫)
——————-
গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৬৬/ আল-কুরআনের ফাযীলাতসমূহ (كتاب فضائل القرآن)
হাদিস নম্বরঃ ৫০১৫

৫০১৫. আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সহাবীদেরকে বলেছেন, তোমাদের কেউ কি এক রাতে কুরআনের এক-তৃতীয়াংশ তিলাওয়াত করা সাধ্যাতীত মনে কর? এ প্রশ্ন তাদের জন্য কঠিন ছিল। এরপর তারা বলল, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমাদের মধ্যে কার সাধ্য আছে যে, এটা পারবে? তখন তিনি বললেন, ‘‘কুল হুআল্লাহ আহাদ’’ অর্থাৎ সূরাহ ইখ্লাস কুরআনের তিন ভাগের এক ভাগ।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৬৪৬)
——————–

আরো পড়ুন

About Abdul Latif Sheikh

Check Also

ফেরেশতা যাদের জন্য দোয়া করেন

ফেরেশতা যাদের জন্য দোয়া করেন , ১.ওযূ অবস্থায় ঘুমানো ব্যক্তি: ঘুমানোর পূর্বে ওযু করা উত্তম …

এত বড় হুজুর কি ভুল করতে পারেন?

এত বড় হুজুর কি ভুল করতে পারেন? আমাদের দেশের মুসলিমদের ভিভ্রান্ত থাকার একটা বড় কারন …

বিস্ময়কর আজওয়া খেজুরের ইতিহাস

বিস্ময়কর আজওয়া খেজুরের ইতিহাস– হযরত সালমান ফার্সীর(রা:) মালিক ছিল একজন ইয়াহুদী। হযরত সালমান ফার্সী যখন …