সুরা সফ আয়াত ০৯-১৩ দারস
هُوَ ٱلَّذِىٓ أَرْسَلَ رَسُولَهُۥ بِٱلْهُدَىٰ وَدِينِ ٱلْحَقِّ لِيُظْهِرَهُۥ عَلَى ٱلدِّينِ كُلِّهِۦ وَلَوْ كَرِهَ ٱلْمُشْرِكُونَ()يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا هَلْ أَدُلُّكُمْ عَلَى تِجَارَةٍ تُنْجِيكُمْ مِنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ () تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَتُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنْفُسِكُمْ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ () يَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَيُدْخِلْكُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ وَمَسَاكِنَ طَيِّبَةً فِي جَنَّاتِ عَدْنٍ ذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ () وَأُخْرَى تُحِبُّونَهَا نَصْرٌ مِنَ اللَّهِ وَفَتْحٌ قَرِيبٌ وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِينَ
অর্থ: “তিনি সেই, যিনি তাঁর রাসূলকে হিদায়াত ও সত্য দ্বীনসহ পাঠিয়েছেন যাতে তিনি একে সব ধর্মের উপর বিজয়ী করেন, যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে।”-(৯) হে মুমিনগণ! আমি কি তোমাদেরকে এমন এক ব্যবসার কথা বলব যা তোমাদেরকে পীড়াদায়ক আযাব হতে রক্ষা করবে? (১০) তোমরা ঈমান আন আল্লাহ ও তার রাসুলের প্রতি এবং জিহাদ কর আল্লাহর পথে নিজেদের ধনসম্পদ এবং জীবন দিয়ে। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম; যদি তোমরা বুঝ।–(১১) তিনি তোমাদের গুনাহ-খাতা মাপ করে দিবেন এবং তোমাদেরকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যার পাদদেশ দিয়ে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত এবং বসবাসের জন্য অতীব উত্তম বাসস্থান দান করবেন চিরস্থায়ী জান্নাতে, এটাই বিরাট সাফল্য। (১২) এবং আরো একটি অনুগ্রহ দিবেন, যা তোমরা পছন্দ কর; আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য এবং নিকটবর্তী বিজয়। (হে রাসুল) মুমিনদেরকে এর সুসংবাদ জানিয়ে দিন। (১৩)
নামকরণ
সুরার ৪র্থ আয়াতের বাক্যাংশ “সফ” বা “কাতার বন্দী” শব্দটিকে এর নাম হিসাবে গ্রহণ করা হয়েছে। আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় বান্দা তারাই যারা তার পথে “কাতার বন্দী” হয়ে সীসাঢালা প্রাচীরের মত লড়াই করে।
শানে নযূল
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম হতে বর্ণিত একদা একদল সাহাবায়ে কেরাম পরস্পরে আলোচনা করলেন যে, আল্লাহ তায়ালার কাছে সর্বাধিক প্রিয় আমল কোনটি আমরা যদি তা জানতে পারতাম তাহলে তার আমল করতাম। তারা এব্যাপারে নবী করীম (সঃ) কে প্রশ্ন করার জন্য কাউকে পাঠাতে চাচ্ছিলেন কিন্তু কারো সাহস হচ্ছিল না। ইতিমধ্যে রাসুলুল্লাহ (সঃ) তাদেরকে নামে নামে নিজের কাছে ডেকে পাঠালেন। তারা তাঁর নিকট উপস্থিত হলে তিনি তাদেরকে সমগ্র সুরা সফ পাঠ করে শুনালেন যা তখনই নাযিল হয়েছিল। (আহমাদ, ইবনে কাসীর)
আলোচ্য বিষয়
এ সুরায় কথা ও কাজের মধ্যে বৈপরিত্য বা মুনাফেকী সম্পর্কে কঠোর ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এধরনের কাজ আল্লাহর নিকট খুবই গর্হিত ও নিন্দনীয় কাজ। পক্ষান্তরে সবচেয়ে পছন্দনীয় কাজ হল আল্লাহর পথে জিহাদ করা তা ও সুরায় আলোচনা করা হয়েছে। মুসলমানদেরকে আহলে কিতাব তথা ইহুদী খৃষ্টানদের আচরণের কথা উল্লেখ করে সতর্ক করা হয়েছে যেন তারা এ ধরনের আচরণ না করে। কাফের মুশরিকরা চায় আল্লাহর দ্বীনকে ধ্বংস করতে পক্ষান্তরে আল্লাহ তার দ্বীনকে বিজয়ী করবেনই বলে দ্বীপ্ত ঘোষণা দান করেছেন এবং মুসলমানদেরকে তার দ্বীনের পথে জিহাদ করার জন্য তারগীব করেছেন এবং এর সওয়াব বর্ণনা করেছেন আর আল্লাহর সাহায্যকারী হওয়ার জন্য উদ্ধুধ করেছেন। এ বিষয়গুলিকে সাবলীল ভাষায় এ সুরায় আলোচনা করা হয়েছে।
ব্যাখ্যা
৯ নং আয়াত
هُوَ ٱلَّذِىٓ أَرْسَلَ رَسُولَهُۥ بِٱلْهُدَىٰ وَدِينِ ٱلْحَقِّ لِيُظْهِرَهُۥ عَلَى ٱلدِّينِ كُلِّهِۦ وَلَوْ كَرِهَ ٱلْمُشْرِكُونَ
“তিনি সেই, যিনি তাঁর রাসূলকে হিদায়াত ও সত্য দ্বীনসহ পাঠিয়েছেন যাতে তিনি একে সব ধর্মের উপর বিজয়ী করেন, যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে।
“সত্য দ্বীন” (الدِّينِ الْحَقِّ) — এই শব্দটি কুরআনে বহুবার এসেছে এবং এর অর্থ ও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, এটি এমন একটি জীবনব্যবস্থা যা আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত, বিকৃত নয়, এবং সর্বদা হক তথা সত্য প্রতিষ্ঠার ওপর নির্ভরশীল।
সুরা তওবার ৩৩ নং আয়াতে একই কথা আল্লাহ উল্লেখ করেছেন।
هُوَ ٱلَّذِىٓ أَرْسَلَ رَسُولَهُۥ بِٱلْهُدَىٰ وَدِينِ ٱلْحَقِّ لِيُظْهِرَهُۥ عَلَى ٱلدِّينِ كُلِّهِۦ وَلَوْ كَرِهَ ٱلْمُشْرِكُونَ
“তিনি সেই, যিনি তাঁর রাসূলকে হিদায়াত ও সত্য দ্বীনসহ পাঠিয়েছেন যাতে তিনি একে সব ধর্মের উপর বিজয়ী করেন, যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে।
সুরা ফাতাহ ২৮ নং আয়াতে একই কথা আল্লাহ উল্লেখ করেছেন।
هُوَ ٱلَّذِىٓ أَرْسَلَ رَسُولَهُۥ بِٱلْهُدَىٰ وَدِينِ ٱلْحَقِّ لِيُظْهِرَهُۥ عَلَى ٱلدِّينِ كُلِّهِۦ
“তিনি সেই, যিনি তাঁর রাসূলকে হিদায়াত ও সত্য দ্বীনসহ পাঠিয়েছেন যাতে তিনি একে সব ধর্মের উপর বিজয়ী করেন,
এই দ্বীন বলতে কি বুঝানো হয়েছে তা সুরা আল ইমরামের ১৯ নং আয়াতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে
اِنَّ الدِّیۡنَ عِنۡدَ اللّٰهِ الۡاِسۡلَامُ
নিশ্চয় ইসলামই আল্লাহর নিকট একমাত্র দ্বীন
এই দ্বীন মানুষের তৈরি করা সকল মতবাদ এর উপর বিজয়ী করার জন্য রাসুল সাঃ কে পাঠানো হয়েছে। আমরা রাসুল সাঃ এর উম্মত হিসেবে আমাদেরকেও এই দায়িত্ব পালন করতে হবে, এটি আমাদের উপরে ফরয।
সুরা শুরা এর ১৩ নং আয়াতে আল্লাহ বলেছেন
شَرَعَ لَكُمۡ مِّنَ الدِّیۡنِ مَا وَصّٰی بِهٖ نُوۡحًا وَّ الَّذِیۡۤ اَوۡحَیۡنَاۤ اِلَیۡكَ وَ مَا وَصَّیۡنَا بِهٖۤ اِبۡرٰهِیۡمَ وَ مُوۡسٰی وَ عِیۡسٰۤی اَنۡ اَقِیۡمُوا الدِّیۡنَ وَ لَا تَتَفَرَّقُوۡا فِیۡهِ ؕ كَبُرَ عَلَی الۡمُشۡرِكِیۡنَ مَا تَدۡعُوۡهُمۡ اِلَیۡهِ ؕ اَللّٰهُ یَجۡتَبِیۡۤ اِلَیۡهِ مَنۡ یَّشَآءُ وَ یَهۡدِیۡۤ اِلَیۡهِ مَنۡ یُّنِیۡبُ
তিনি তোমাদের জন্য বিধিবদ্ধ করেছেন দ্বীন, যার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি নূহকে, আর যা আমরা ওহী করেছি আপনাকে এবং যার নির্দেশ দিয়েছিলাম ইবরাহীম, মুসা ও ঈসাকে, এ বলে যে, তোমরা দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত কর এবং তাতে বিভেদ সৃষ্টি কর না। আপনি মুশরিকদেরকে যার প্রতি ডাকছেন তা তাদের কাছে কঠিন মনে হয়। আল্লাহ যাকে ইচ্ছে তার দ্বীনের প্রতি আকৃষ্ট করেন এবং যে তাঁর অভিমুখী হয় তাকে তিনি দ্বীনের দিকে হেদায়াত করেন।
১০ –১৩ নং আয়াত
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا هَلْ أَدُلُّكُمْ عَلَى تِجَارَةٍ تُنْجِيكُمْ مِنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ () تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَتُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنْفُسِكُمْ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ () يَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَيُدْخِلْكُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ وَمَسَاكِنَ طَيِّبَةً فِي جَنَّاتِ عَدْنٍ ذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ () وَأُخْرَى تُحِبُّونَهَا نَصْرٌ مِنَ اللَّهِ وَفَتْحٌ قَرِيبٌ وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِينَ
অর্থ: হে মুমিনগণ! আমি কি তোমাদেরকে এমন এক ব্যবসার কথা বলব যা তোমাদেরকে পীড়াদায়ক আযাব হতে রক্ষা করবে? (১০) তোমরা ঈমান আন আল্লাহ ও তার রাসুলের প্রতি এবং জিহাদ কর আল্লাহর পথে নিজেদের ধনসম্পদ এবং জীবন দিয়ে। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম; যদি তোমরা বুঝ।–(১১) তিনি তোমাদের গুনাহ-খাতা মাপ করে দিবেন এবং তোমাদেরকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যার পাদদেশ দিয়ে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত এবং বসবাসের জন্য অতীব উত্তম বাসস্থান দান করবেন চিরস্থায়ী জান্নাতে, এটাই বিরাট সাফল্য। (১২) এবং আরো একটি অনুগ্রহ দিবেন, যা তোমরা পছন্দ কর; আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য এবং নিকটবর্তী বিজয়। (হে রাসুল) মুমিনদেরকে এর সুসংবাদ জানিয়ে দিন। (১৩)
এই আয়াতগুলোতে আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে ০২টি কাজের বিনিময়ে ০৫ টি পুরুষ্কারের ঘোষনা করেছেন।
কাজ দুটি হলো
১। আল্লাহ ও তার রাসুল সাঃ এর প্রতি ইমান আনতে হবে।
২। সম্পদ ও জান দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করতে হবে।
পুরুস্কার পাচটি হলো
পুরুস্কার ০৫ টির মধ্যে তিনটি মৃত্যুর পরের জীবনে বাকি দুটি দুনিয়ার জীবনে দেওয়া হবে।
মৃত্যুর পরের জীবনের তিনটি হলো
১। কবরের পীড়াদয়ক আযাব থেকে মুক্তি দেওয়া হবে
২। সকল পাপসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।
৩। জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, যার তলদেশ দিয়ে নহরসমূহ প্রবাহিত
দুনিয়ার জীবনের দুটি হলো
৪। আল্লাহ সাহায্য করবেন
৫। নিকটতম বিজয় দান করবেন।
কাজ ১। আল্লাহ ও তার রাসুল সাঃ এর প্রতি ইমান আনতে হবে
সুরা সফ এর ১১ নং আয়াতে বলা হয়েছে
تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ
তোমরা ঈমান আন আল্লাহ ও তার রাসুলের প্রতি
এই সম্পর্কে সুরা হুজরাত এর ১৫ নং আয়াতে বলা হয়েছে
“إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ ثُمَّ لَمْ يَرْتَابُوا وَجَاهَدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ”
“মুমিন তো তারাই, যারা আল্লাহ ও রসূলের প্রতি ঈমান আনে, তারপর কোন সন্দেহ করে না এবং আল্লাহর পথে নিজেদের ধন-সম্পদ ও প্রাণ দ্বারা জিহাদ করে।”
কাজ ২। সম্পদ ও জান দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করতে হবে
সুরা সফ এর ১১ নং আয়াতে বলা হয়েছে
وَتُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنْفُسِكُمْ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ
এবং জিহাদ কর আল্লাহর পথে নিজেদের ধনসম্পদ এবং জীবন দিয়ে। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম; যদি তোমরা বুঝ।
এই সম্পর্কে সুরা হুজরাত এর ১৫ নং আয়াতে বলা হয়েছে
“إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ ثُمَّ لَمْ يَرْتَابُوا وَجَاهَدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ”
“মুমিন তো তারাই, যারা আল্লাহ ও রসূলের প্রতি ঈমান আনে, তারপর কোন সন্দেহ করে না এবং আল্লাহর পথে নিজেদের ধন-সম্পদ ও প্রাণ দ্বারা জিহাদ করে।”
সুরা তওবা আয়াত নং ৪১
“انفِرُوا خِفَافًا وَثِقَالًا وَجَاهِدُوا بِأَموَالِكُم وَأَنفُسِكُم فِي سَبِيلِ اللَّهِ ۚ ذَٰلِكُم خَيرٌ لَكُم إِن كُنتُم تَعلَمُونَ“
তোমরা বের হও হালকা হোক বা ভারী, এবং আল্লাহর রাস্তায় তোমাদের ধন-সম্পদ ও প্রাণ দ্বারা জিহাদ করো। এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে
পুরুস্কার ১। কবরের পীড়াদয়ক আযাব থেকে মুক্তি দেওয়া হবে
সুরা সফ আয়াত-১০
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا هَلْ أَدُلُّكُمْ عَلَى تِجَارَةٍ تُنْجِيكُمْ مِنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ
হে মুমিনগণ! আমি কি তোমাদেরকে এমন এক ব্যবসার কথা বলব যা তোমাদেরকে পীড়াদায়ক আযাব হতে রক্ষা করবে।
এখানে ব্যবসার কথা বলা হয়েছে, সুরা তওবার ১১১ নং আয়াতে একই কথা বলা হয়েছে
اِنَّ اللّٰهَ اشۡتَرٰی مِنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ اَنۡفُسَهُمۡ وَ اَمۡوَالَهُمۡ بِاَنَّ لَهُمُ الۡجَنَّۃَ ؕ یُقَاتِلُوۡنَ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ فَیَقۡتُلُوۡنَ وَ یُقۡتَلُوۡنَ ۟ وَعۡدًا عَلَیۡهِ حَقًّا فِی التَّوۡرٰىۃِ وَ الۡاِنۡجِیۡلِ وَ الۡقُرۡاٰنِ ؕ وَ مَنۡ اَوۡفٰی بِعَهۡدِهٖ مِنَ اللّٰهِ فَاسۡتَبۡشِرُوۡا بِبَیۡعِكُمُ الَّذِیۡ بَایَعۡتُمۡ بِهٖ ؕ وَ ذٰلِكَ هُوَ الۡفَوۡزُ الۡعَظِیۡمُ
“নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনদের থেকে তাদের জান ও মাল ক্রয় করে নিয়েছেন — তাদের জন্য জান্নাতের বিনিময়ে। তারা আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করে, হত্যা করে ও নিহত হয়। এটি একটি সত্য ওয়াদা — তাওরাত, ইনজিল ও কুরআনে (আল্লাহর পক্ষ থেকে)। আর আল্লাহর চেয়ে বেশি কে নিজের ওয়াদা পূর্ণ করে? সুতরাং তোমরা তোমাদের এই বায়আতে (চুক্তিতে) আনন্দিত হও, যা তোমরা আল্লাহর সঙ্গে করেছ। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় সফলতা।”
পুরুস্কার ২। সকল পাপসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে
সুরা সফ আয়াত-১২
يَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ
তিনি তোমাদের গুনাহ-খাতা মাপ করে দিবেন
সুরা যুমুর আয়াত-৫৩
قُلۡ یٰعِبَادِیَ الَّذِیۡنَ اَسۡرَفُوۡا عَلٰۤی اَنۡفُسِهِمۡ لَا تَقۡنَطُوۡا مِنۡ رَّحۡمَۃِ اللّٰهِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ یَغۡفِرُ الذُّنُوۡبَ جَمِیۡعًا ؕ اِنَّهٗ هُوَ الۡغَفُوۡرُ الرَّحِیۡمُ
বলুন, হে আমার বান্দাগণ! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ; আল্লাহ্র অনুগ্রহ থেকে হতাশ হয়ো না, নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গোনাহ ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
পুরুস্কার ৩। জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, যার তলদেশ দিয়ে নহরসমূহ প্রবাহিত
সুরা সফ আয়াত-১২
وَيُدْخِلْكُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ وَمَسَاكِنَ طَيِّبَةً فِي جَنَّاتِ عَدْنٍ ذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
এবং তোমাদেরকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যার পাদদেশ দিয়ে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত এবং বসবাসের জন্য অতীব উত্তম বাসস্থান দান করবেন চিরস্থায়ী জান্নাতে, এটাই বিরাট সাফল্য।
সুরা বাকারার ৮২ নং আয়াতে বলা হয়েছে
وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ اُولٰٓئِكَ اَصۡحٰبُ الۡجَنَّۃِ ۚ هُمۡ فِیۡهَا خٰلِدُوۡنَ
আর যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে তারাই জান্নাতবাসী, তারা সেখানে স্থায়ী হবে
পুরুস্কার ৪। আল্লাহ সাহায্য করবেন
সুরা সফ আয়াত-১৩
وَأُخْرَى تُحِبُّونَهَا نَصْرٌ مِنَ اللَّهِ
এবং আরো একটি অনুগ্রহ দিবেন, যা তোমরা পছন্দ কর; আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য
এখানে আল্লাহ বলেছেন যে এটি আমরা ভালোবাসি তাই সাহায্য পেতে হলে আল্লাহর দেওয়া দুটি কাজ করতে হবে।
সুরা আল ইমরান আয়াত ১৬০
اِنۡ یَّنۡصُرۡكُمُ اللّٰهُ فَلَا غَالِبَ لَكُمۡ ۚ وَ اِنۡ یَّخۡذُلۡكُمۡ فَمَنۡ ذَا الَّذِیۡ یَنۡصُرُكُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِهٖ ؕ وَ عَلَی اللّٰهِ فَلۡیَتَوَكَّلِ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ
আল্লাহ্ তোমাদেরকে সাহায্য করলে তোমাদের উপর জয়ী হবার কেউ থাকবে না। আর তিনি তোমাদেরকে সাহায্য না করলে, তিনি ছাড়া কে এমন আছে, যে তোমাদেরকে সাহায্য করবে? সুতরাং মুমিনগণ আল্লাহর উপরই নির্ভর করুক
পুরুস্কার ৫। নিকটতম বিজয় দান করবেন।
সুরা সফ আয়াত-১৩
وَفَتْحٌ قَرِيبٌ وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِينَ
এবং নিকটবর্তী বিজয়। (হে রাসুল) মুমিনদেরকে এর সুসংবাদ জানিয়ে দিন।
সুরা ফাতহ আয়াত-০১
اِنَّا فَتَحۡنَا لَكَ فَتۡحًا مُّبِیۡنًا
নিশ্চয় আমরা আপনাকে দিয়েছি সুস্পষ্ট বিজয়
শিক্ষা
১। আল্লাহর দ্বীন বিজয়ের জন্য চেষ্টা করা ফরয
২। আল্লাহর দেওয়া দুটি কাজ করে পাচটি পুরুস্কার অর্জন করা যাবে।